প্রধান নদ নদী
মধুমতি নদী
এ জেলার প্রধান কয়েকটি নদী হলো মধুমতি, ঘাঘর, কুমার, বারাসিয়া এবং বিলরুট ক্যানেল বা কাটা মধুমতি। মধুমতি নদীর তীরেই গোপালগঞ্জ শহর। পদ্মার একটি প্রধান শাখা নদী মাগুড়া জেলার মোহাম্মদপুর পর্যন্ত গড়াই নামে প্রবাহিত হয়েছে। এখান হতে নদীর নাম মধুমতি। আরো এগিয়ে গিয়ে কচুয়ার কাছে এ নদীর নাম হয় বলেশ্বর। বৃহত্তর ফরিদপুর, বরিশাল, খুলনা ও যশোর জেলার সীমানা চিহ্ন আকতে আকতে কত না বিচিত্র বাহারি সব গঞ্জ, বন্দর, নগর, জনপদে প্রাণের স্পর্শ বুলিয়ে প্রবাহিত এ নদী। এক সময় বড় বড় লঞ্চ, স্টিমার, শীপ, কার্গোসহ বিভিন্ন জাহাজের চলাচলে মুখরিত ছিল এ নদী। তবে ফারাক্কা বাধেঁর বিরুপ প্রভাবে এক সময়ের প্রমত্তা নদী মধুমতি হারিয়েছে তার যৌবনের লাবন্য। প্রশস্ততার সাথে সাথে গভীরতা হারিয়ে জায়গা বিশেষে ক্ষীণতায় হয়ে খালের মত হয়েছে।
বিলরুট ক্যানেল বা কাটা মধুমতি
নদীপথ কমিয়ে এনে এ অঞ্চলের বাণিজ্যিক ব্যবস্থায় গতি সঞ্চার এবং বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী পরিবহনের সুবিধার জন্য মধুমতির মানিকদহ বন্দরের নিকট থেকে উত্তর এবং উত্তর পুর্বদিক বরাবর উরফি, ভেড়ারহাট, উলপুর, বৌলতলী, সাতপাড়, টেকেরহাট হয়ে উতরাইল বন্দরের কাছাকাছি পর্যন্ত প্রায় ৬০/৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ ক্যানেলটি খনন করা হয়। ১৮৯৯-১৯০৫ খ্রীষ্টাব্দ সময়কাল এই খালটি কাটা হয়। খালটি ৪০০ ফূট প্রশস্থ এবং ৩০ ফূট গভীর। তৎকালীন সময় খালটি খননের জন্য ব্যয় হয় ৩৩,৬৬,৮৭৬ টাকা। এ খাল খননেন ফলে নদীপথে ঢাকা খুলনার দুরত্ব ১৫০ মাইল কমে যায় এবং বঙ্গোপসাগর হয়ে আসা পণ্য সহজেই কলকাতা বন্দরে পাঠানো যায়। এটি বঙ্গের সুয়েজ খাল নামে পরিচিত। ইংরেজ আমলে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নির্মাণ কাজের সাথে এ কাজটিকে তুলনা করা হতো। প্রথমদিকে ক্যানেলটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপর ছিল। পরে ১৯৬৩ সালে মাদারীপুর বিল রুটের দায়িত্বভার বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ -পরিবহন সংস্থার নিকট হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালে এই বিলরুটের সংরক্ষণ ও মেরামতের দায়িত্ব বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়। মাদারীপুর বিলরুট একটি ব্যস্ত জলপথ। খুলনা হতে চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা যাওয়ার একটি সংক্ষিপ্ত নৌ-পথ। এর গতিপথ মোটামুটি সরল। তবে মাঝে মাঝে ভাঙন প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। আর প্রচুর পরিমাণ পলি পরার ফলে প্রায়ই চরের সৃষ্টি হয়। ফলে শুকনো মৌসুমে নৌ চলাচল বাধাগ্রস্থ হয়। খুলনা ঢাকার সংযোগকারী এই রুটের উপর মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলায় বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর অংশ বিশেষের নৌ চলাচল, ব্যবসা ও আর্থ সামাজিক জীবন নির্ভরশীল।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস